প্লেটোর পত্রাবলি (ইংরেজিতে লেটারস্; গ্রিকে এপিস্তলে)।
সাধারণভাবে প্লেটোর যে তেরোটি পত্র থ্রাসিল্লাস-এর সূত্রে আত্মজীবনীকার দায়োজিনিজ লুক্রেশাস লিখিত প্লেটোর জীবনীতে উল্লেখিত হয়েছে, তা-ই এই পত্রগুচ্ছে স্থান পেয়েছে। সবগুলো পত্রই প্লেটোর জীবনের শেষ দুই দশকে লেখা। অধিকাংশ পত্রই, যেমন পত্র এক, দুই, তিন ও তেরো সাইরাকিউজের একনায়ক দাইয়ানিসিয়াসের উদ্দেশে লিখিত। প্লেটো সাইরাকিউজের এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন; একনায়কতন্ত্রী শাসনকে প্রজ্ঞার শাসনে, ‘সর্বোত্তমের’ শাসনে,‘দার্শনিক-রাজার’ শাসনে পরিবর্তিত করা যায় কি না, তার প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। এই প্রচেষ্টায় তাঁর সহযোগী হয়েছিল প্লেটোর শিষ্য ও দাইয়ানিসিয়াসের শ্যালক দিয়ন। তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে প্লেটোর সবচেয়ে বিখ্যাত সপ্তম পত্রটি লিখিত হয়েছিল। এই পত্র প্লেটোর জীবনী নির্মাণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি থেকে যেমন প্লেটোর জীবনের ঘটনাবলি জানা যায় তেমনই তাঁর রাজনৈতিক দর্শনেরও দিশা পাওয়া যায়। আমরা পৃথিবীর প্রাচীনতম এবং সর্ববৃহৎ ‘রাজনৈতিক প্রকৌশলায়নের’ ব্যর্থতার সংবাদ পাই এই পত্রটিতে। দিয়নের সহযোগীদের কাছে লিখিত সপ্তম পত্রে প্লেটোর জীবনের অন্তিম পর্বে ‘জ্ঞান’ নিয়ে, জ্ঞানেরও অধিক ‘বুদ্ধিবিভাসা’ ও ‘প্রদীপন’ নিয়ে প্লেটো তাঁর প্রত্যয় গড়ে তুলেছিলেন; প্লেটোর জ্ঞানতত্তে¡ তা-ও এক মাইলফলক হিসেব বিবেচিত হয়। উপস্থাপিত চিঠিপত্র প্রামাণিক কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যাকার-বিশ্লেষক প্রশ্ন তুলেছেন। তার প্রধান কারণ হলো রচনার দেড়শত বছর, এমনকি তার কিছুকাল পর পর্যন্তও এসব পত্রের হদিশ পাওয়া যায়নি। আবার অ্যারিস্টটলও এসব চিঠিপত্র উল্লেখ করেননি। কিন্তু এই পত্রসমূহে উল্লেখিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, দার্শনিক প্রত্যয় এবং সেগুলোর ভাষাভঙ্গি বিশ্লেষণ করে এই তেরোটি পত্রের মধ্যে আটটির প্রামাণিকতায় অধিক সংখ্যক ব্যাখ্যাকার একমত হয়েছেন বলে জানতে পারি আমরা।-
শিরোনাম | প্লেটোর পত্রাবলি |
---|---|
লেখক | আমিনুল ইসলাম ভুইয়া |
প্রকাশনী | পাঠক সমাবেশ |
Need an account? Register Now