''পাছ দুয়ারের তিনদিকে রান্নাঘর, নিরামিষ-ঘর আর ঢেঁকিঘর। বাইর দুয়ারে বিশাল উঠান। উঠানের একদিকে কাছারী-ঘর, অন্যদিকে গাভীর ঘর। আর মাঝ দুয়ারের চারপাশ ঘিরে সে-আমলের বেলজিয়াম ঢেউটিনের চারচালা চারটি ঘর, বারান্দাসহ। ছোট ছোট চারটি দোচালা শেড দিয়ে ঘরগুলোকে জুড়ে দেওয়া, যাতে বৃষ্টির সময় এক ঘর থেকে অন্য ঘরের বারান্দায় যাওয়া যায়।’’ বিংশ শতাব্দীর এক টালমাটাল সময়ে পাবনার সুজানগরের গ্রামীন গৃহস্থ পরিবারে লেখক এমনই এক তিন দুয়ারের কোলে জন্মেছেন, বড়ো হয়েছেন। এরপর বহু কাজে, বহু পথে আরও বহু দুয়ার পেরিয়েছেন; পরিচিতি পেয়েছেন আধুনিক ঢাকার সুরম্য সব স্থাপনার নির্মাণ যজ্ঞের অন্যতম কুশীলব হিসেবে। সুভাষ ঘোষ একদিকে যেমন বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদলের সাক্ষী, তেমনি তাঁর পেশাগত অভিজ্ঞতার মূল্যও অসাধারণ। সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে গ্রামীণ জীবন, শিক্ষাঙ্গন, হিন্দু-মুসলমান বৈরিতা, দাঙ্গা, দেশভাগ, পরবর্তিতে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ’৭১ পরবর্তী পুনর্গঠন নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ গ্রন্থটিকে গভীরতর একটি মূল্য প্রদান করেছে। এই স্মৃতিকথার তাৎপর্য শুধু সেটুকুও নয়। বরং যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আলোড়ন ও ডামাডোলের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষ গিয়েছেন, সেসবের সাপেক্ষে একজন ব্যক্তি হিসেবে তার অবস্থান, অনুভূতি এবং প্রতিক্রিয়ারও সুক্ষ ও খুঁটিনাটি বিবরণ গ্রন্থটিতে ব্যক্তিগত সংবেদনের আবহ প্রদান করেছে। আমরা যাকে বলি সামাজিক ইতিহাস, সেই বিচারে তিন দুয়ারের কোলে বাংলা ভাষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ সংযোজন।
শিরোনাম | তিন দুয়ারের কোলে |
---|---|
লেখক | সুভাষ ঘোষ |
প্রকাশনী | দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) |
Need an account? Register Now