রাসুলুল্লাহর পর খুলাফা রাশিদুন উম্মাতের সেরা প্রজন্ম। তাদের সময়ে ইসলাম যতটা বিশুদ্ধ, যতটা প্রভাবশালী ছিল, অন্য আর কোনো সময়ে ততটা ছিল না। যতটা সম্মান আর আত্মমর্যাদা নিয়ে কালের সে অধ্যায়ে মুসলিমরা জীবনযাপন করেছেন, ইতিহাসে তেমন আর কোনো অধ্যায় আজ অবধি আসেনি।
আফসোসের বিষয়, আমরা বর্তমান প্রজন্মের মুসলিমরা সমাজ ও জীবন-বিধ্বংসী নায়ক-গায়ক, খেলোয়াড়-মডেল কিংবা হালের প্রতাপশালী শাসকদের সম্পর্কে যতটা জানি, খুলাফা রাশিদুনের মহান ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে ততটাই কম জানি।
মুসলিম উম্মাহর সার্বিক অবস্থার সাথে আমাদের এই ঔদাসীন্যের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। আমরা যদি পুনরায় আমাদের সেই গৌরবোজ্জ্বল সময়টা ফিরিয়ে আনতে চাই, তা হলে নক্ষত্রসম এই মানুষগুলোর জীবনাচার ও কর্মধারা সম্পর্কে জানা ও তা আমাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার কোনো বিকল্প নেই।
দুর্দশাগ্রস্ত মুসলিম উম্মাহর বর্তমান করুণ অবস্থা নিয়ে ভাবতে বসলে আমাদের মন চলে যায় যুন-নুরাইন উসমান ইবনু আফফানের শাসনামলে। তার সততা, সরলতা আর নিজ রক্তের বিনিময়ে উম্মাহর রক্তের সুরক্ষা প্রদানের মানসিকতার সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তরা সেই দুর্বৃত্তি শুরু করল, আজ পর্যন্ত তাঁর অবসান হলো না। মাঝেমধ্যে হয়তো তার মাত্রা ও তারতম্যে পার্থক্য হয়েছে; কিন্তু কখনো তা বন্ধ হয়নি।
খলিফা উসমানের অন্তরে যে আল্লাহভীরুতা, মনের যে সরলতা, উম্মাহর যে কল্যাণকামিতা এবং ব্যক্তিত্বে যে মূর্ছনা ছিল—সেসবের কাছে এই উম্মাহ চিরকাল ঋণী।
আবু বাক্র উমারের পর উসমানই ছিলেন উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তান। ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করেননি, কেবল উম্মাহর রক্তের প্রতি তার অকুণ্ঠ দায়িত্ববোধের কারণে। দুষ্কৃতকারীদের হাতে তার নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে যে ফিতনার মধ্যে উম্মাহ পতিত হয়েছে, আর তা বন্ধ করা যায়নি—আজও।
আমরা আশা করি, কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি : এই মহান ব্যক্তিত্বের জীবনীর আলোকচ্ছটা যেন সর্বপ্রথম আমাদের এই জাতিকে উদ্ভাসিত করে। এর হাত ধরে যেন আগামী দিনে খিলাফাত আলা মানহাজিন নুবুওয়্যাহ ফিরিয়ে আনার মতো যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসে উম্মাহর কল্যাণ সাধনে।
শিরোনাম | উসমান ইবনু আফফান রা. জীবন ও শাসন |
---|---|
লেখক | ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি |
প্রকাশনী | সিয়ান পাবলিকেশন |
Need an account? Register Now