কেউ কেউ কবি নয়; সকলই কবি! আমরা কবি হয়েই জন্মাই। কবি মানেই তো অসম্ভব কল্পনাকে অক্ষরের বুননে সম্ভব করে তোলা। কল্পনার পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় সওয়ার হওয়া। কিন্তু বড়ো হতে হতে আমাদের কবি-মনের ওপর লাভ-ক্ষতির নিরেট আস্তরণ পড়ে যায়। জীবনের রেসে ছুটতে ছুটতে আমরা হাঁপিয়ে উঠি। তবু কেউ কেউ জীবনের এই রেসে জিততে চায় না। হারতে চায় স্বেচ্ছায়। তারাই কবি। তারা জীবনের ক্যালকুলেটরের বোতামে বন্দী হয়ে যায় না। এমনই একজন কবি আবদুল্লাহ্ হামীম, ইশতেহারের সুরে যিনি জানিয়ে দিচ্ছেন, তাকে বন্দী করে সাধ্য কারো নেই-‘কবিকে বন্দি করতে চেয়ো না/ যখন তা পারেনি রোমান, গ্রিক কিংবা কনস্টান্টিনোপলান/ কবিকে ধরতে চালিও না তাই/ একের পর এক প্রলুব্ধকর অভিযান।’কবিরা অধরা, কবিরা এই মর্ত্যরে নন। আবদুল্লাহ্ হামীমের কবিতায় দ্রোহ আছে, ক্রোধ আছে; আছে বাষ্পরুদ্ধ অভিমান, ভীষণ খেপে ওঠা একটা রাগ; আর এই শক্ত খোলসের আড়ালে আছে যন্ত্রণাদগ্ধ একটা কবিমন। কবিরা তো শিশুও।সেই শিশুর অবোধ্য-অবাধ্য আবেগ কার জন্য? কে সে? আমরা জানি না। তবে এতটুকু অনুভব করি, কবির সব অক্ষর, সব দাঁড়িকমাও সেই আড়ালকন্যাকে উদ্দেশ করে। যিনি হামীমের সঙ্গে কানামাছি খেলছেন। যিনি কবিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন বলে হামীম লিখছেন, ‘আমি কখনোই মন পাব না, তাই ঠিক করলাম আজই, নারী, তোমার কাছে আর যাব না।’প্রেমটা তাই উঁকি দিয়েও প্রকাশিত হলো না। নাকি চাপা ক্রোধের মধ্যেও কি লুকিয়ে আছে প্রেম? নাকি এই নষ্ট সময়ে প্রেমেরা আর কাদামাখা পৃথিবীতে নেমে আসে না!ভীষণভাবে সেই অধরাকে ধরতে চেয়েই হামীমের বুকে শব্দের বুদ্বুদ তৈরি হয় বুঝি। আবদুল্লাহ্ হামীম হয়ে ওঠেন বর্ণমালার চাষী।রাজীব হাসানলেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক সিনিয়র সহসম্পাদক, প্রথম আলো
শিরোনাম | অহ |
---|---|
লেখক | আবদুল্লাহ্ হামীম |
প্রকাশনী | অনিন্দ্য প্রকাশ |
Need an account? Register Now